রকি ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন
২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থী বন্ধুরা তোমাদের জন্য মানবিক বিভাগের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক প্রথম সপ্তাহে দেয়া এসাইনমেন্ট রকি ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন নিয়ে হাজির হলাম। আজকের আর্টিকেলটি অধ্যায়নের মাধ্যমে তোমরা ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার ৫ম সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক সমাধান বা উত্তর লেখার যাবতীয় তথ্য পাবে।
এখানে আমরা মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক প্রদত্ত জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড কর্তৃক প্রণীত ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পঞ্চম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ে নির্ধারিত কাজের নির্দেশনা অথবা প্রশ্নসমূহ ধারাবাহিকভাবে অনুসরণের মাধ্যমে রকি, ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন করার চেষ্টা করব।
এসএসসি পরীক্ষা ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট ভূগোল ও পরিবেশ
পঞ্চম সপ্তাহে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের ভূগোল ও পরিবেশ পাঠ্যবই থেকে তৃতীয় এসাইনমেন্ট সংগ্রহ করা হয়েছে চতুর্থ অধ্যায়ঃ পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক গঠন থেকে।
নিচের ছবিতে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের পঞ্চম সপ্তাহে ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক তৃতীয় শ্রেণীর বিস্তারিত উল্লেখ করা হলো।
অ্যাসাইনমেন্ট শিরোনাম: রকি, ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেষ্ট পর্বত এবং বাংলাদেশের মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর একটি প্রতিবেদন প্রণয়ন;
নির্দেশনা (সংকেত/ধাপ/পরিধি):
ক) ভুপৃষ্ঠের পরিবর্তন প্রক্রিয়ার প্রকারভেদ বর্ণনা করতে পারবে;
খ) পৃথিবীর প্রধান ভুমিরূপের প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করতে পারবে;
গ) পর্বত ও সমভূমির গঠন ও প্রকারভেদ বর্ণনা করতে পারবে;
এসএসসি পরীক্ষা ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান বা উত্তর
ভূগোল ও পরিবেশ তৃতীয় অ্যাসাইনমেন্ট-এ দেওয়া নির্দেশনা এবং মূল্যায়ন রুবিক্স গুলো যথাযথভাবে অনুসরণ করে তোমাদের জন্য রকি, ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন করে দেয়া হলো।
আশা করছি এটা অনুসরণ করার মাধ্যমে তোমরা এসএসসি পরীক্ষা ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহের ভূগোল ও পরিবেশ অ্যাসাইনমেন্ট সমাধান বা উত্তর লিখতে পারবে এবং মূল্যায়নের সর্বোচ্চ ফলাফল পাবে।
রকি ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন
উপরে দেওয়া ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার ভূগোল ও পরিবেশ বিষয়ক দ্বিতীয় এসাইনমেন্ট এর নির্দেশনা উল্লেখিত প্রশ্নসমূহ ধারাবাহিক উত্তর প্রদানের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জন্য রকি, ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন করে দেয়া হলো।
উত্তর লেখার ক্ষেত্রে অবশ্যই তোমরা স্বকীয়তা, নিজস্বতা ও সৃজনশীলতা বজায় রাখার চেষ্টা করবে যাতে মূল্যায়নে শিক্ষকগণ সর্বোচ্চ নম্বর দিতে বাধ্য হন।
(অ্যাসাইনমেন্ট এর উত্তর শুরু)
ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন প্রক্রিয়াঃ
ভূপৃষ্ঠ সর্বদা পরিবর্তনশীল। নানাপ্রকার ভূপ্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তন সাধন করে। যে সমস্ত কার্ধাবলির কারণে প্রাকৃতিকভাবে তূমিরুপের পরিবর্তন সাধিত হয় তা ভূপ্রকিয়া। যেমন: নদী অবক্ষেপণের মাধ্যমে প্লাবন ভূমি গড়ে তুলছে। এখানে মদী অবক্ষেপণ একটি প্রকিয়া।
ভূপ্রকিয়া তার কার্য সাধনের জন্য নানাপ্রকার প্রাকৃতিক শক্তির সাহায্য নেয়। যেমন: মাধ্যাকর্ষণ, ভূতাপীয় শত্তি এবং সৌরশত্তি। এ সমস্ত শত্তির সাহায্যে তুপ্রক্রিয়া ভূপৃষ্ঠের কোথাও ধীরে ধীয়ে পরিবর্তন আনে, আবার কখনো কখনো খুব দুত পরিবর্তন সাধন করে। সাধারণভাবে বহিঃশত্তির (যেমন: সৌরশক্তি) সঙ্গে জড়িত তূপ্রক্রিয়া তৃপৃষ্ঠে ধীর পরিবর্তন আনে। সুদীর্ঘ সময় ধরে ভূপৃষ্ঠে এই পরিবর্তন চলে বিধায় একে ধীর পরিবর্তন বলে। ধীর পরিবর্তন সাধারণত দুটি প্রক্রিয়ায় সম্পন্ন হয়।
যেমন: সমীভবন ও অবক্ষেপণ। অপরদিকে অন্তপশত্তির (যেমন: ভুমিকম্প) সঙ্গে জড়িত ভূপ্রকিয়ায় তূপৃষ্টে ভুত পরিবর্তন সাধিত হয়। নিচে ভূত়কের পরিবর্তন সাধনকারী উপ্রক্রিয়াসমূহের একটি ছক দেওয়া হলো।
ধীর পরিবর্তন : ধীর পরিবর্তন হলো আকম্মিক পরিবর্তনের একেবারেই বিপরীত অবস্থা। অনেকগুলো প্রাকৃতিক শক্তি যেমনসূর্বতাপ, বায়ুপ্রবাহ, বৃষ্টিপাত, নদী, হিমবাহ প্রভৃতি দ্বারা যে পরিবর্তন ধীরে ধীরে সংঘটিত হয় তাকে ধীর পরিবর্তন বলে। এই ধীর পরিবর্তন বিশাল এলাকা জুড়ে হয়ে থাকে।
আকম্মিক পরিবর্তন: পৃথিবীর অভ্যন্তরভাগ এখনও উত্তপ্ত ও গলিত অবস্থায় রয়েছে। এসব উত্তপ্ত বস্তুর মধ্যে তাপ ও চাপের পার্থক্য হলে ভূতৃকে যে আলোড়ন ঘটে তাকে ভূআলোড়ন বলে। এ ভূআলোড়নের ফলেই ভূপৃষ্ঠের বেশিরভাগ পরিবর্তন হয়ে থাকে। বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠনকারী শত্তির প্রভাবে ভূগর্ভে সর্বদা নানারুপ পরিবর্তন হচ্ছে।
আগ্নেয়গিরির অগ্যুৎপাত, ভূকম্পন, পৃথিবীর অভ্যন্তরের সংকোচন, ভূগর্ভের তাপ ও অন্যান্য প্রচ্ড শত্তির ফলে তৃপৃষ্ঠে হঠাৎ যে পরিবর্তন সাধিত হয়, তাকে আকম্মিক পরিবর্তন বলে। এরূপ পরিবর্তন খুব বেশি স্থান জুড়ে হয় না। আকম্মিক পরিবর্তন সংঘটিত হয় প্রধানত ভূমিকম্প, সুনামি ও আগ্নেয়গিরি দ্বারা।
ভূপৃষ্ঠের আকষ্মিক পরিবর্তনের কারণঃ
আমরা জানি পৃথিবীর আকস্মিক পরিবর্তনের জন্য তিনটি প্রধান তৃমিরুপের সৃষ্টি হয়। তা হলো পর্বত, মালভূমি এবং সমভূমি। এসব তৃমিরূপ বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক শস্তি যেমনসূর্যতাপ, বায়ু, বৃষ্টি, নদী প্রভৃতি দ্বারা খুব ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে নতুন ভূমিরূপে পরিণত হয়। এই পরিবর্তন প্রক্রিয়াকে ধীর পরিবর্তন বলে।
এতে সুর্যতাপ, বায়ু, বৃষ্টি, নদী প্রভৃতি শস্তি খুব ধীরে ধীরে ভূতৃকের ক্ষয়সাধন করে থাকে। ফলে ভূতৃকের উপরিস্থিত শিলা ভেঙে চুর্ণ-বিদূর্ণ হয়। এই শিলা অপসারিত হয়, আবার নতুন করে শিলা চূর্ণ-কিচর্ণ হয়। এভাবে পর্যায়ক্রমে প্রাকৃতিক শত্তির প্রভাবে ভূমি ক্ষযপ্রাপ্ত হতে থাকে। যেসব প্রক্রিয়ায় ভূমিরূপের ধীর পরিবর্তন হচ্ছে তাদেরকে প্রধানত চারটি পর্যায়ে বিতন্ত করা যায়।
ক) বিচূর্ণীভবন ও ক্ষয়ীভবন; (খ) অপসারণ; (গ) নগ্নীভবন; (ঘ) অবক্ষেপণ;
ক) বিচূর্ণীভবন ও ক্ষয়ীভবন: শিলারাশির চূর্ণ-বিচূর্ণ ও বিগ্রিষট হওয়া কিন্তু স্থানান্তর না হলে তাকে বিচূর্ণীভবন বলে। সাধারণত প্রাকৃতিক কারণে শিলা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়। বায়ুপ্রবাহ, নদীপ্রোত ও হিমবাহ ঘারা শিলা ক্ষয়সাধন হয়। যে প্রক্রিয়ায় শিলাখন্ড স্থানান্তরিত হয় তাকে ক্ষয়ীভবন বলে।
(খ) অপসারণ: নদীস্রোত, বায়ুপ্রবাহ ও হিমবাহ প্রভৃতি শত্তির ছারা চূর্ণ-বিচূর্ণ পদার্থগুলো স্থানান্তরিত হয়। একে অপসারণ বলে।
(গ) নগ্বীভবন: বিচুর্ণীভবনের সময় শিলা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়। ক্ষয়ীভবন দ্বারা এ শিলা অপসারিত হলে নিচের অবিকৃত শিলাগুলো নগ্ন হয়ে পড়ে। এরুপ কার্যকে নগ্নীভবন বলে।
(ঘ) অবক্ষেপণ: বায়ুপ্রবাহ, নদীত্রোত, হিমবাহ প্রভৃতি শস্তির প্রভাবে নানা স্থান থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাগুলো যে প্রক্রিয়ায় কোনো একস্থানে এসে জমা হয়ে নতুন ভূমিবুপের সৃষ্টি করে তাকে অবক্ষেপণ বলে।
যেসব প্রাকৃতিক শত্তির প্রভাবে ক্ষয়ীভবনের মধ্য দিয়ে ধীর রিবন সেটিত হয় তাদের মধ্যে বা বৃষ্টিপাত, নদী, হিমবাহ প্রভৃতি প্রধান। এদের ক্ষয়কার্য নিম্নে আলোচিত হলো
বায়ুর কাজ: বায়ুতে থাকা অক্সিজেন, কার্বন ডাইঅক্সাইড ও জলীয়বাম্প রাসায়নিক প্রক্রিয়ায় শিলার বিচ্ছেদ ও ক্ষয়সাধন করে। বায়ুর ক্ষয়কার্য মবুভূমিতে অধিক দেখা যায়। মু এলাকা শু, প্রায় বৃ্টিহীন এবং গাছপালা শূন্য। মরু এলাকায় গাছপালা কম থাকার কারণে মৃত্তিকা সুদৃঢ় নয়। এছাড়া দিনের বেলায় সূর্ধের তাপে এবং রাতের শীতলতায় শিলার সংকোচন ও প্রসারণের ফলেও সংবদ্ধতা শিথিল হয়ে যায়। এরপর বায়ুপ্রবাহের আঘাতে এ অঞ্চলের শিলা সহজেই বাহিত হয়ে ধীর পরিবর্তনের মাধ্যমে ক্ষয়সাধন করে।
বৃষ্টির কাজ: বৃষ্টির পানি ভূপৃষ্ঠের উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার সময় ভূপৃষ্ঠকে ব্যাপকভাবে ক্ষয় করে প্রবাহিত হওয়ার সময় পানি শিলাকে আর্থশকভাবে ক্ষয় ও আলগা করে এবং ক্ষয়প্রাপ্ত শিলাকে প্রসারিত করে। বৃ্ণিবহুল অঞ্চলে কর্ষিত জমির মাটি বৃষ্টির পানির দ্বারা অপসারিত হয়। জাবার পর্বতের মধ্যে কর্দন সুরের উপর অনেক ভারী শিলা হেলানো অবস্থায় থাকে। পর্বতের ফাটল দিয়ে পানি প্রবেশ করে কাদার স্তরকে গলিয়ে দেয়, এতে বড় শিলান্তর কাদার উপর থাকতে না পেরে নিচে ধসে পড়ে। মৃক্তিকা পাত বলে। এভাবে অনেকদিন ধরে ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ধীর পরিবর্তন হয়।
হিমবাহের কাজঃ হিমবাহের ঘ্ারাও ভূপৃষ্ঠের কোনো কোনো অঞ্চল ব্যাপকভাবে ক্ষয় হয়ে থাকে। হিমবাহের নিচে নামার সময় এর নিচের প্রস্তরখন্ড পর্বতগাত্র থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে অনেক দূরে গিয়ে পতিত হয়। পর্বতগাত্রের মধ্যে ছিদ্র যদি থাকে তাহলে তার ভিতর পানি প্রবেশ করে বরফে পরিণত হয়ে প্রস্তরগুলোকে আলগা করে দেয়। ফলে হিমবাহের চাপে এটি পর্বতগাত্র থেকে খুব সহজেই পৃথক হয়ে যায়। এই হিমবাহ অনেকদিন ধরে ধীরে ধীরে হয় বলে এটি ভূপৃষ্ঠের ধীর পরিবর্তনের একটি উদাহরণ ।
নদীর কাজঃ যেসব প্রাকৃতিক শক্তি ভূপৃষ্ঠের প্রতিনিয়ত ধীর পরিবর্তন করছে তাদের মধ্যে নদীর কাজ জন্যতম। নদী যখন পর্বতের মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয় তখন ঘ্রোতের আঘাতে বাহিত নুড়ি, কর্দম প্রভৃতির ঘর্ষণে নদীগর্ভ ও পার্শক্ষয় হয়। পার্বত্য অবস্থায় নদীর প্রোতের বেগ বেশি থাকে।
এতে নদী নিচের দিকে অগ্রসর হতে থাকে এবং কোনো সঞ্চয় হতে পারে না। যখন নদী সমভূমিতে আসে তখন নদী ক্ষয় এবং সঞ্চয় দুটোই করে। নদীর চলার পথে যেখানে নরম শিলা পাবে নদী ঠিক সেদিক দিয়ে ক্ষয় করে অগ্রসর হয়। ক্ষয়কৃত নরম শিলা অবক্ষেপণ করে বিভিন্ন ভূমিরূপ গঠন করে। এভাবে নদী ক্ষয় ও সঞ্চয় করতে করতে সমুদ্ধে গিয়ে পড়ে। অনেকদিন ধরে এভাবে ক্ষয় ও সঞ্চয় কাজ চলে বলে একে নদীর ঘ্বারা ধীর পরিবর্তন বলে।
রকি ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন
খ) পৃথিবীর প্রধান ভুমিরূপের প্রকারভেদ ও বৈশিষ্ট্য বর্ণনা;
ভূপৃষ্ঠ সর্বত্র সমান নয়। এর আকৃতি, প্রকৃতি এবং গঠনগত বেশ কিছু পার্থক্য আছে। ভূমির এই আকৃতি ও গঠনগত বৈশিষ্ট্যকেই ভূমিকপ বলে | ভূপৃষ্ঠের কোথাও রয়েছে উঁচু পর্বত, কোথাও সমতল, কোথাও পাহাড়, কোথাও মালভূমি | এছাড়া বিভিন্ন স্থানের উচ্চতা, বন্ধুরতা এবং ঢালের মধ্যে পার্থক্য রুয়েছে । ভৌগোলিক দিক দিয়ে বিচার করলে পৃথিবীর সমগ্র ভূমিরূপকে তিনটি ভাগে ভাগ করা যায় | এগুলো হলো: (১) পর্ব, (২) মালভূমি, (৩) সমভূমি।
পর্বতঃ সমুদ্রতল থেকে অন্তত ১,০০০ মিটারের বেশি উঁচু সুবিতৃত ও খাড়া ঢালবিশিষ্ঠ শিলান্ভুপকে পর্বত বলে। সাধারণত ৬০০ থেকে ১,০০০ মিটার উঁচু স্বল্প বিস্তৃত শিলাভুপকে পাহাড় বলে। পর্বতের উচ্চতা সদুদ্রপৃষ্ঠ থেকে কয়েক হাজার মিটার হতে পারে । পর্বতের ভূপ্রকৃতি বন্ধুর, ঢাল খুব খাড়া এবং সাধারণত চূড়বিশিষ্ঠ্য হয় । কোনো কোনো পর্বত বিচ্ছিন্নভাবে অবস্থান করে।
যেমন: পূর্ব আফ্রিকার কিলিমানজারো, আর কিছু পর্বত অনেকগুলো পৃথক শূঙ্গসহ ব্যাপক এলাকা জুড়ে অবস্থান করে। যেমন: হিমালর পর্বতমালা;
পর্বতের প্রকারভেদ:
উৎপত্তিগত বৈশিষ্ট্য ও গঠনপ্রকৃতির ভিত্তিতে পর্বত প্রধানত চার প্রকার। যথা-
ক) ভঙ্গিল পর্বত, (খ) আগ্রেয় পর্বত, (গ) চ্যুতি-স্তূপ পর্বত, ঘ) ল্যাকোলিথ পর্বত;
(ক) ভঙ্গিল পর্বত : ভঙ্গ বা ভাজ থেকে ভঙ্গিল শব্দটির উৎপত্তি। কোমল পাললিক শিলায় ভীজ পড়ে যে পর্বত গঠিত হয়েছে তাকে ভঙ্গিল পর্বত বলে। এশিয়ার হিমালয়, ইউরোপের আল্পস, উত্তর আমেরিকার রকি, দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজ পর্বত ভঙ্গিল পর্বতের উদাহরণ। ভঙ্গিল পর্বতের প্রধান বৈশিষ্ট্য ভাজ।
ভঙ্গিল পর্বত কীভাবে সৃষ্টি হয়? সমুদ্র তলদেশের বিস্তারিত অবনমিত স্থানে দীর্ঘকাল ধরে বিপুল পরিমাণ পলি এসে জমা হয়। এর চাপে অবনমিত স্থান আরও নিচে নেমে যায়।
পরবর্তী পর্যায়ে ভূআলোড়ন বা ভূমিকম্পের ফলে এবং উধবভাজ ও নিম্নভাজের সৃষ্টি হয়। বিস্তৃত এলাকা জুড়ে এ সমস্ত উরধ্ব ও অধঃভাজ সংবলিত ভূমিরূপ মিলেই ভঙ্গিল পর্বত গঠিত হয়।
(খ) আগ্নেয় পর্বত: আগ্নেয়গিরি থেকে উদগিরিত পদার্থ সঞ্চিত ও জমাট বেঁধে আগ্নেয় পর্বত সৃষ্টি হয়। একে সঞ্চিত পর্বতও বলে। এই পর্বত সাধারণত মোচাকৃতির হয়ে থাকে। আগ্নেয় পর্বতের উদাহরণ হলোইতালির ভিসুভিয়াস, এবং ফিলিপাইনের পিনাটুবো পর্বত।
(গ) চ্যুতি-স্তূপ পর্বত: ভূআলোড়নের সময় ভূপৃষ্ঠের শিলাস্তরে প্রসারণ এবং সংকোচনের সৃষ্টি হয়। এই প্রসারণ এবং সংকোচনের জন্য ভূত্বকে ফাটলের সৃষ্টি হয়। কালক্রমে এ ফাটল বরাবর ভূত্বক ক্রমে স্থানচ্যুত হয়। ভূগোলের ভাষায় একে চ্যুতি বলে।
ভূত্বকের এ স্থান্চুতি কোথাও উপরের দিকে-হয়, আবার কোথাও নিচের দিকে হয়। চ্যুতির ফলে উচু হওয়া অংশকে স্তূপ পর্বত বলে তারতের বিস্ধ্যা ও সাতপুরা পর্বত, জার্দপনির ব্র্যাক ফরেস্ট, পাকিস্তানের লবণ পর্বত চ্যুতি-স্তূপ পর্বত উদাহরণ।
ঘ) ল্যাকোলিথ পর্বত: পৃথিবীর অভ্যন্তর থেকে গলিত শিলা বা ম্যাগমা বিভিন্ন গ্যাসের দ্বারা স্থানান্তরিত হয়ে ভূপৃষ্ঠে বের হয়ে আসার চেফী করে। কিন্তু কোনো কোনো সময় বাধা পেয়ে এগুলো ভূপৃষ্ঠের উপরে না এসে ভূতকের নিচে একস্থানে জমাট বাধে।
উধ্বমুখী চাপের কারণে স্ফীত হয়ে ভূতকের অংশবিশেষ গম্থজ আকার ধারণ করে। এভাবে সৃষ্ট পর্বতকে ল্যাকোলিথ পর্বত বলে (চিত্র ৪.১৬) ঢাল সামান্য খাড়া স্বল্প অঞ্চলব্যাপী বিস্তৃত। পর্বতের কোনো শৃঙ্গ থাকে না। আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের হেনরী পর্বত এর উদাহরণ।
মালভূমি:
পর্বত থেকে ন্চু কিন্তু সমভূমি থেকে উচু খাড়া ঢালযুক্ত ঢেউ খেলানো বিস্তীর্ণ সমতলভূমিকে মালভূমি বলে। পৃথিবীর বৃহত্তম মালভূমির উচ্চতা ৪,২৭০ থেকে ৫,১৯০ মিটার। বস্থানের ভিত্তিতে মাপভুমি তিন ধরনের।
যথা-(ক) পর্বতমধ্যবতী মালভূমি (খ) পাদদেশীয় মালভূমি ও (গ) মহাদেশীয় মালভূমি
(ক) পর্বতমধ্যবর্তী মালভূমি : এই মালভূমি পর্বতবেষ্টিত থাকে। দক্ষিণ মহাসাগর আমেরিকার বণিভিয়া, মধ্য আমেরিকার মেক্সিকো এবং এশিয়ার মঙ্গোলিয়া ও তারিম
এ ধরনের মালভূমি।
(খ) পাদদেশীয় মালভূমি: উচ্চ পর্বত ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে এর পাদদেশে তলানি জমে যে মালভূমির সৃষ্টি হয় তাকে পাদদেশীয় মালভূমি বলে। উত্তর আমেরিকার কলোরাডো এবং দক্ষিণ আমেরিকার পাতাগোনিয়া পাদদেশীয় মালভূমি।
(গ) মহাদেশীয় মালভূমি: সাগর বা নিমভূমি পরিবেষ্টিত বিস্তীর্ণ উচ্চভূমিকে মহাদেশীয় মালভূমি বলে। এ ধরনের মালভূমির সঙ্গো পর্বতের কোনো সংযোগ থাকে না। স্পেন, অস্ট্রেলিয়া, সৌদি আরব, গ্রিনল্যান্, এন্টার্কটিকা এবং ভারতীয় উপদ্বীপ এর অন্যতম উদাহরণ।
সমভূমিঃ সমুদপৃষ্ঠ থেকে অল্প উচু মৃদু চালবিশিষ্ট সুবিস্তৃত ভূমিকে সমভূমি বলে। বিভিন্ন ভূপ্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যেমন- নদী, হিমবাহ ও বায়ুর ক্ষয় ও সঞ্চয়ক্রিয়ার ফলে সমভূমির সৃষ্টি হয়। মৃদু ঢাল ও স্বল্প বন্ধুরতার জন্য সমভূমি কৃষিকাজ, বসবাস, রাস্তাঘাট নির্মাণের জন্য খুবই উপযোগী। তাই সমভূমিতে সবচেয়ে ঘন জনবসতি গড়ে উঠেছে।
উৎপত্তির ধরনের ভিত্তিতে সমভূমিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায় যেমন: ক্ষয়জাত সমভূমি ও সঞ্চয়জাত সমভূমি।
ক্ষয়জাত সমভূমিঃ বিভিন্ন প্রাকৃতিক শক্তির যেমননদীপ্রবাহ, বায়ুপ্রবাহ এবং হিমবাহের ক্ষয়ক্রিয়ার ফলে কোনো উচ্চভূমি ক্ষয়প্রাপ্ত হয়ে ক্ষয়জাত সমভূমির সৃষ্টি হয়। আ্যাপালেশিয়ান পাদদেশীয় সমভূমি, ইউরোপের ফিনল্যান্ড ও সাইবেরিয়া সমভূমি এ ধরনের ক্ষয়জাত সমভূমি। বাংলাদেশের মধুপুরের চতুর ও বরেন্দ্রভূমি দুটি ক্ষয়জাত সমভূমির উদাহরণ।
সঞ্চয়জাত সমভূমিঃ নদী, হিমবাহ, বায়ুপ্রবাহ প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তি দ্বারা পলি, বালুকণা, ধুলিকণা কোনো নিম অঞ্চলে সঞ্চিত হয়ে কালক্রমে যে সমভূমি সৃষ্টি হয় তাকে সঞ্চয়জাত সম্ভূমি বলে। এ ধরনের সঞ্চয়জাত সমভূমি পার্বত্য অঞ্চল থেকে শুরু করে সমুদ্র উপকূল পর্যস্ত যে কোনো অবস্থানে সৃষ্টি হতে পারে।
যেমন: নদীর পলি অবক্ষেপণের মাধ্যমে সৃষ্ট প্লাবন সমভূমি, নদীর মোহনার কাছাকাছি এসে নদী সঞ্চয়ের মাধ্যমে সৃষ্ট ব-দ্বীপ, শীতপ্রধান এলাকায় হিমবাহের গ্রাবরেখা দ্বারা সঞ্চয়কৃত পলি থেকে গড়ে ওঠা হিমবাহ সমভূমি।
বন্ধুরা এই ছিল তোমাদের জন্য পঞ্চম সপ্তাহে ২০২১ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের মানবিক বিভাগের ভূগোল তৃতীয় এসাইনমেন্ট এর উত্তর সমাধান রকি, ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন।
উত্তর দাতা, মোঃ শাখাওয়াত হোসেন
সকল স্তরের সব সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট সমূহের বাছাই করা উত্তরসমূহ দেখার জন্য নিচের বাটনে ক্লিক করে বাংলাদেশের সেরা অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার গ্রুপে যোগ দিন। এখানে দেশের সকল প্রান্তের সেরা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান মেধাবী শিক্ষার্থী ও অভিজ্ঞ শিক্ষকমন্ডলী নিয়মিত আলোচনার মাধ্যমে তাদের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত যাবতীয় সমস্যার সমাধান করছেন।
পঞ্চম সপ্তাহে মানবিক বিভাগের অন্যান্য বিষয়ের সমাধান বা উত্তর
[ninja_tables id=”10746″]প্রতি সপ্তাহে সকল স্তরের অ্যাসাইনমেন্ট সংক্রান্ত সকল তথ্য পাওয়ার জন্য বাংলা নোটিশ এর ফেসবুক পেজটি লাইক এবং ফলো করে রাখুন ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে রাখুন এবং প্লেস্টোর থেকে অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপটি ডাউনলোড করে রাখুন।
আপনার জন্য আরও কিছু তথ্যঃ
এসএসসি ২০২১ পঞ্চম সপ্তাহের সকল বিষয়ের অ্যাসাইনমেন্ট ও সমাধান
[ninja_tables id=”10614″]রকি ফুজিয়ামা ও ব্লাকফরেস্ট পর্বত বাংলাদেশে মধুপুর চত্বর ও ব-দ্বীপ গঠন প্রক্রিয়ার উপর প্রতিবেদন প্রণয়ন